ফাল্গুনী সন্ধ্যায় জীর্ণ বাঁশের সাঁকো টা দুলছে। ক্লান্ত শরীরে ঘরে ফেরে চাষীর দল, মাথায় গুল্ম লতার
টুকিটাকি বোঝা। কংসাবতীর বুকে জমে থাকা গতিহীন
জলধারা, গাঢ় সবুজ শ্যাওলা গুলি অতীতের গতি ছন্দে
আজও মাথা নত করে আছে, আর তাতে খেলা করে উজ্জ্বল
রুপোলি ছোট মাছের দল। নদীর বক্ষে প্রকাণ্ড শিমুল গাছের
লাল ফুলগুলি ধীরে ধীরে গাঢ় অন্ধকারে মিলিয়ে যাবে। দূর
হতে ভেসে আসে সেচ মেশিনের শব্দ। অন্ধকারে নিশি বক টা
প্রতীক্ষা করে আছে, দু একটা মাছ ধরে নেবে সে। চারিদিকে
ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শ্মশান চিতার আধপোড়া কাঠ। সন্ধ্যা
স্নান সেরে বুড়িমা হাঁক দেয় 'আয় বাবা বোঝাটা একটু মাথায়
তুলে দিয়ে যা'। কে ডেকে নেয় এমন করে, অনেক গুলো
বছর কেউ ডাকেনি এমন করে। আকাশ পানে দেখি একটা
উজ্জ্বল নক্ষত্র তাকিয়ে আমার দিকে। এই তো সেদিন, তবুও মনে হয় শত বসন্ত দেখা হয় নি
আমাদের। আজ দোল পূর্ণিমা, আমি আর কংসাবতী
মাঝখানে অনেকখানি দূরত্ব। তুমি তো বলেই দিলে, ' চলে
এসো, কতই এমন দূরত্ব!' আমি বলি পোড়া কপাল আমার,
বসন্তে দেখা হবে না আর, আজকে পূর্ণিমার চাঁদ টার দিকে
তাকিয়ে দেখো ঠিক দেখতে পাবে, যেমন করে জানালার
কাঁচে, সবার আড়ালে দেখে নেওয়া যায়। আর হ্যাঁ তুমি শিমুল
গাছ টাকে বলে দিও। সে যেন অপেক্ষায় থাকে ফুল আর
বসন্ত নয়, তার সাথে দেখা হবে কচি সবুজ পাতা, নরম তুলো
আর কালবৈশাখীর দেশে।
Hiranmoy © 12/03/2021 Photography and support, Krishnendu, prakash
Comments