কোন এক গ্রীষ্মের তপ্ত দুপুরে উদ্দেশ্যহীন ভাবে হেঁটে চলা এরকম টা নতুন কিছু নয়। একটা ছোট্ট আদিবাসী গ্রাম ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা কত গুলো কাঁচা বাড়ি আর চাষের ক্ষেত। এ গ্রামের বুকের উপর বয়ে চলেছে ক্ষীণকায় একটা স্বচ্ছ জলধারা, গ্রীষ্মের প্রখর তাপে কোথাও কোথাও সেই জলধারায় ছেদ পড়েছে। ক্ষেতের মধ্য দিয়ে এঁকে বেঁকে চলেছে উত্তপ্ত লাল মাটির পথ। এ এক অসম্ভব নির্জনতা, ঝিঁঝিঁ পোকারা ক্রমাগত সেই নির্জনতায় নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিয়ে চলেছে। এই রূপ নির্জনতায় তোমাকে অনুভব করার একটা নেশা ধরে যায় মনে। আমি থমকে দাড়িয়েছি, পথের ধারে আকাশ ছোঁয়া দুটো তেতুলের গাছ আর তার ঘন নিবিড় ছায়া আমার পথ আটকে আছে। আমার মত সেই নিবিড় ছায়ায় আপন মনে বসে আছে আরো অনেকেই। কোন একটা বাড়ি থেকে ক্ষীণ সুরে গান ভেসে আসে "মা তোর চোখের কাজল সারা গায়ে মাখিয়ে দিল কে?" এ পাড়ায় মানুষ এখনো রেডিও শোনে। সামনে ঘন সবুজে সবজি মাচায় সাদা ফুল ফুটে আছে। এমন সবজি মাঁচা তোমার পছন্দ ছিল খুব। আজকাল কেন জানি না এমনই ছোট কিছু যা তুমি পছন্দ করতে আমিও সেগুলোর প্রতি কেমন একটা দুর্বল হয়ে পড়ি।এরকম
দূর্বলতার কারনে রাত জেগে বসে থাকি, রাত্রির গভীরতা যত বাড়ে, বাড়ে নির্জনতা আর নির্জনতা মানেই তো তুমি। এমনই গ্রাম্য সরল মানুষ, ঝিঙে মাঁচা, সূর্যমূখীর ক্ষেত এসবের মাঝে আমি তোমাকে খুঁজে পাই। মনটা বড্ড অস্থির হয়ে ওঠে আজকাল। এমনই কোন ক্ষেতের শেষে, এমনই কোন এক পথের বাঁকে আর নির্জনতায় কখনও কি এসে দাঁড়াবে তুমি? অথবা তুমিও কি অনুভব কর আমার এই ছুঁতে চাওয়া কে?
© Hiranmoy
コメント